বাবাকে ‘পশু ও রেপিস্ট’ চিরকুট লিখে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আত্মহত্যা
রাজধানীর দক্ষিণখানে ১০তলা ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে বেসরকারি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর আত্মহত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। শনিবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে মোল্লারটেক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে সন্ধ্যা ৭টার দিকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
নিহত শিক্ষার্থীর নাম সানজানা (২১)। তিনি বেসরকারি ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির তৃতীয় সেমিস্টারের শিক্ষার্থী ছিলেন।
আত্মহত্যার আগে চিরকুটে ওই ছাত্রী তার বাবাকে ‘অত্যাচারী ও রেপিস্ট’ উল্লেখ করেছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, ওই ছাত্রী আজ দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে গুরুতর আহত হন। গুরুতর অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি স্থানীয় হাসপাতালে এবং পরে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে বিকাল ৪টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করে দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মামুনুর রশীদ বলেন, ‘শনিবার দুপুরের দিকে কাপড় শুকানোর কথা বলে বাসার সিকিউরিটি গার্ডের কাছ থেকে চাবি নিয়ে ছাদে যান ওই শিক্ষর্থী। পরে ১০তলা ভবন থেকে লাফিয়ে আত্মহত্যা করেন।’
ওসি আরও বলেন, ‘নিহত শিক্ষার্থীর বাবা শাহীন আলম গত পাঁচ বছর আগে তাদের না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করেন। চার-পাঁচ মাস আগে দ্বিতীয় বিয়ের বিষয়টি জানাজানি হলে দুই পরিবারের মধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। এরপর সানজানার মা গত দুই মাস আগে তার বাবাকে ডিভোর্স দেয়। এ জন্য তার বাবা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেমিস্টার ফিসহ আনুসঙ্গিক খরচাদি দিত না বলে জানা যায়।’
মামুনুর রশীদ বলেন, ‘সানজানার কিছু প্রেসক্রিপশন পেয়েছি। মার্চেও মানসিক রোগের জন্য তিনি চিকিৎসা নিয়েছিলেন। তাতে তার আত্মহত্যার প্রবণতা আছে বলে দেখা গেছে।’
আত্মহত্যার আগে একটি চিরকুট লিখে গেছেন ওই ছাত্রী। চিরকুটটি উদ্ধার করেছে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। চিরকুটে লেখা রয়েছে, ‘আমার মৃত্যুর জন্য বাবা দায়ী। একটা ঘরে পশুর সাথে থাকা যায়, কিন্তু অমানুষের সাথে না। একজন অত্যাচারী রেপিস্ট যে কাজের মেয়েকেও ছাড়েনি। আমি তার করুণ ভাগ্যের সূচনা।’
পুলিশ জানায়, নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন বলেও জানান দক্ষিণখান থানা।