খেলাধুলা

চোখের জলে বিদায় ২২টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ী রজার ফেদেরারের

চোখের জলে বিদায় ২২টি গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ী রজার ফেদেরারের। যে খেলাটা তাকে দিয়েছে এত এত কিছু, বিদায় বলা তো সহজ নয়। যেকোনো অ্যাথলেটের জন্যই দিনটা কঠিন। তবে ফেদেরার অনন্য অন্য জায়গায়। তার পেছনে দাঁড়িয়ে চোখের জল ফেলেছেন ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ‘শত্রু’রাফায়েল নাদাল। 

লেভার কাপ টুর্নামেন্ট চললেও শুক্রবার রাতে লন্ডনের ও’টু এরিনার মঞ্চ যেন ছিল শুধু ফেদেরারের জন্য। যত আগ্রহ ওই একটা ম্যাচ ঘিরেই। সঙ্গে ছিল আবেগ। পেশাদার টেনিস জীবনের শেষ ম্যাচ খেলতে গ্র্যান্ডস্ল্যাম জয়ী নাদালের সঙ্গে কোর্টে আসেন ফেদেরার, তখন পুরো পৃথিবীর চোখই যেন চলে গিয়েছিল লন্ডনে।

লন্ডনের ‘ও টু’ এরেনায় টিম ইউরোপের হয়ে ফেদেরার-নাদাল খেলতে নামেন টিম ওয়ার্ল্ডের ফ্রান্সিস তিয়াফো-জ্যাক সক জুটির বিপক্ষে। প্রথম সেটে ৬-৪ গেমে জিতলেও পরের দুই সেটে ৭-৬ (৭/২), ১১-৯ গেমে হেরে যান নাদালরা।

ম্যাচের পর অশ্রুসজল নয়নে ফেদেরার বলেন, ‘খুবই চমৎকার একটি দিন ছিল। আজ আমি সুখী, দুঃখী নই। এখানে থাকতে পারার অনুভূতিটা বিশাল। আরও একবার জুতোর ফিতা বাঁধা উপভোগ করেছি। সবকিছুই শেষবারের মতো।

রাফার (রাফায়েল নাদাল) সঙ্গে খেলা, কিংবদন্তিদের সঙ্গে সময় কাটানো… সবকিছুই ছিল অসাধারণ। সবাইকে ধন্যবাদ জানাই।’

ফেদেরারের সঙ্গে ৪০ বার মুখোমুখি হয়েছেন নাদাল। কোর্টে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা থাকলেও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ অটুট ছিল সবসময়। নাদাল বলেন, ‘তার সঙ্গে খেলতে পারাটা ছিল সম্মানের। আজ আমার জীবনের একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ বিদায় নিচ্ছে। অনেকগুলো বছর অসংখ্য স্মৃতি ভাগাভাগি করেছি আমরা। এই মুহূর্তটা ব্যাখ্যা করা কঠিন। প্রতি বছরই আমাদের ব্যক্তিগত সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। কিন্তু কোর্টে ছিলাম একেবারে ভিন্ন চরিত্রে। এ কারণটাই হয়তোবা আমাদের দ্বৈরথকে সবচেয়ে চমকপ্রদ ও বড় করে তুলেছিল। তার ক্যারিয়ারের একটা অংশ হতে পেরে আমি গর্বিত। কোর্টে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে এতকিছু ভাগাভাগি করা সত্ত্বেও বন্ধু হিসেবে ক্যারিয়ার শেষ করছি, এটা আরও আনন্দের ব্যাপার।’

ফেদেরারকে বিদায় জানাতে অন্যদের সঙ্গে ও টু এরেনায় উপস্থিত ছিলেন আরেক কিংবদন্তি নোভাক জকোভিচও। দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বীকে মাথায় তুলে উল্লাস করেছেন তিনি। ফেদেরারের বিদায়ে টেনিসের ‘বিগ থ্রি’ যুগের আনুষ্ঠানিক অবসান ঘটলো। বাকি রইলেন নাদাল-জকোভিচ। দীর্ঘদিন ধরে চোটের সঙ্গে লড়ছেন নাদাল। এভাবে আর কতদিন খেলা যায়। হয়তো মনে মনে তিনিও অবসরের কথা ভেবে রেখেছেন।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *