অপরাধজীবনযাত্রা

কাজের খোঁজে ভারতে গিয়ে কিডনি হারালেন তিন বাংলাদেশি

বলিউড ফিল্ম ‘রান’র কথা মনে পড়ে? কুড়ি বছর আগে বলিউডে একটি সিনেমা হয়েছিল। সেখানে দেখা গিয়েছিল এক যুবক দিল্লিতে কাজের খোঁজে এসেছিল। তবে কিডনি পাচার চক্রের পাল্লায় পড়ে নিজের কিডনি হারিয়ে ফেলে সে। সেই একই ঘটনা দুই দশক আগের সেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো ভারতের রাজধানী দিল্লিতেই। যার শিকার তিন বাংলাদেশি যুবক।

সম্প্রতি তিন বাংলাদেশি নাগরিক কীভাবে কিডনি পাচারকারী চক্রের শিকার হয়েছিলেন, তাদের সাথে ঘটে যাওয়া সেই রোমহর্ষক ঘটনার বিবরণ দিয়েছেন তারা।

একজন জানিয়েছেন, কাজের খোঁজে তিনি নিজের দেশ ছেড়ে ভারতে গিয়েছিলেন। কিন্তু কাজ তো দূর অস্ত। নিজের একটি কিডনি হারিয়ে এবার তিনি অসহায়। ভারতের বেশ কয়েকটি বেসরকারি হাসপাতালে এই কিডনি পাচার চক্র সক্রিয় রয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিযোগকারীরা।

গোটা ভারতের বুকেই ছড়িয়ে রয়েছে কিডনি পাচার চক্র। এক একটি কিডনি বিক্রি হচ্ছে ৪ লক্ষ টাকায়। শারীরিক পরীক্ষার নাম করে কিডনি পাচার চক্র নিজের কাজ হাসিল করছে।

তথ্যসূত্রে জানা গেছে, কীভাবে এই তিন বাংলাদেশিকে চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু ভারতের মাটিতে পা রাখার পর চাকরির বদলে কপালে জুটে ছিল দুর্ভোগ। মেডিকেল পরীক্ষার নাম করে তাদের শরীর থেকে বের করে নেওয়া হয়েছিল কিডনি।

অবসাদগ্রস্ত এবং অসহায় অবস্থা কাটিয়ে প্রায় ৪৮ ঘণ্টা পর তারা যখন জ্ঞান ফিরে পান, তারা অনুভব করেন, তাদের শরীরে কিডনি নেই। আর এর ক্ষতিপূরণ বাবদ তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করা হয়েছে ৪ লাখ টাকা।

রুবেল জানান, নিজের দেশে অগ্নিকাণ্ডে যখন আমার কাপড়ের ব্যবসা ধ্বংস হয়ে যায়, আমি তখন একটি এনজিও থেকে ৮ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। আমি ৩ লাখ টাকা শোধ করেছিলাম। কিন্তু বাকি ঋণ আমাদের জন্য আর্থিক বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। এসময় আমার এক বন্ধু আমাকে ভারতে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিল এবং সেই আমার পাসপোর্ট ও মেডিকেল ভিসার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল এবং আমাকে বলা হয়েছিল যে ভারতে আমার চাকরি অপেক্ষা করছে।

১ জুন ভারতে যাওয়ার পর আমাকে বলা হলো যে কোনো চাকরি নেই। উল্টো টাকার বদলে আমার শরীরের কিডনি দিয়ে দেওয়ার জন্য কিছু স্থানীয় লোক আমার উপরে চাপ সৃষ্টি করতে থাকে। কিন্তু আমি তা দিতে অস্বীকার করায় তারা আমার পাসপোর্ট, ভিসা আটকে রাখে। আমি যদি তাদের কথা মেনে না চলি তবে আমাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে যেতে দেওয়া হবে না বলে হুমকি দেওয়া হয়।

চার্জশিট অনুযায়ী জানা গেছে, এই চক্রের পান্ডারা বাংলাদেশে এসে বিভিন্ন ডায়ালাইসিস সেন্টারে গিয়ে রোগীদের খোঁজ করতেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *