বিগত ১৫ বছরে ঋণের জামানত হিসেবে ভুয়া কাগজ বানিয়ে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রচুর অর্থ লোপাট হয়েছে। ঋণের জামানত হিসেবে জমি আর ফ্ল্যাটের ভুয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ব্যাংক খাতে এই মহালুটপাট হয়। সূত্রমতে, ব্যাংকে বন্ধক রাখা সম্পদ বিক্রি করেও খেলাপি ঋণের অর্থ আদায় করতে পারেনি অধিকাংশ সরকারি-বেসরকারি ব্যাংক। অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক আর ক্রেতা যোগসাজশে ঋণের বিপুল পরিমাণ অর্থ আত্মসাৎ করেছে।
এমন পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সম্পত্তি বন্ধক রেখে নেওয়া ঋণের অডিট প্রয়োজন। আর্থিক খাতের দুর্বৃত্তায়ন ঠেকাতে অর্থ আত্মসাৎকারীদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা হওয়া উচিত। পাশাপাশি ব্যাংক খাতের সংস্কারও নিশ্চিত করতে হবে বলে মনে করেন অংশীজনেরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, খেলাপি ঋণ ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা ব্যাংকগুলোর বিতরণ হওয়া ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। আর মোট ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৮৩ হাজার ৩৯৬ কোটি টাকা।
খেলাপি ঋণ নিয়ে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট বা বিআইবিএম ২০২৩ সালে ‘ক্রেডিট অপারেশনস অব ব্যাংকস’ শীর্ষক গবেষণায় বলছে, গত বছরের জুন শেষে জমি বন্ধক রেখে ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ৯ লাখ ২০ হাজার ৯০৪ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে। বিশাল অঙ্কের এ ঋণের ৬৩ দশমিক ৬৮ শতাংশই জমি-ফ্ল্যাট-বাড়িসহ রিয়েল এস্টেট সম্পত্তি বন্ধক রেখে নেওয়া হয়েছে। অতীতে এসব তথ্য একাধিকবার গণমাধ্যমে উঠে এলেও সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি বলে জানা গেছে।
এ প্রসঙ্গে বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাইদি সাত্তার দেশের স্বনামধন্য একটি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘খেলাপি ঋণ আদায়ের জন্য মৌলিক সংস্কার দরকার। বড় বড় ব্যবসায়ীদের কোনো রিস্ক ফ্যাক্টর নেই। কিন্তু তাঁদের মধ্যে অনেকেই ইচ্ছাকৃত খেলাপি। এ ধরনের খেলাপি সংস্কৃতি দূর করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যারা ভুয়া জামানত, একই জামানত একাধিক ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বন্ধক রেখে ঋণ নিয়েছেন, তাদের কাছ থেকে টাকা আদায় করা বিরাট চ্যালেঞ্জ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর এসব বিষয়ে কাজ হাতে নিয়েছেন। যদিও কাজটি অনেক কঠিন, তবে করা সম্ভব। ’
গত জুন শেষে ব্যাংক খাতের বিতরণকৃত ঋণের মোট স্থিতি ছিল ১৪ লাখ ৪৬ হাজার ৭২ কোটি টাকা।
সূত্র আরো জানান, গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সহরটোক মৌজার পাঁচটি দাগের এক একরের বেশি জমি জামানত নিয়েছে দেশের বেসরকারি খাতের একটি ব্যাংক। এর বিপরীতে একটি নামসর্বস্ব আবাসন কোম্পানিকে ২৫০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে।
সরকারি ও ওয়াক্ফকৃত এসব সম্পত্তির বড় অংশই বিভিন্ন ব্যাংকে জামানত দিয়েছেন প্রভাবশালী গ্রাহকরা। বিপরীতে হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে ব্যাংকগুলো। এ পরিস্থিতিতে বিতর্কিত জমি বন্ধক রেখে বিতরণকৃত ব্যাংক ঋণের কতটুকু ফিরে আসবে, তা নিয়ে শঙ্কা বাড়ছে।
কোটা সংস্কার আন্দোলন ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকারের পতন ঘিরে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে গত…
দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতকে একহাত নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড.…
পদত্যাগ করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনার । আজ বৃহস্পতিবার (৫…
৮ জেলায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে ,মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর…
জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ভবিষ্যতে ‘জাতীয় সরকারের’ মাধ্যমে দেশ পরিচালনা চায় বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত…
স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার কবলমুক্ত হওয়ার এক মাস পার করছে বাংলাদেশ। আজ থেকে ঠিক একমাস…