অপরাধআইন-আদালতঢাকা

জাজিরায় ইলিশ রক্ষা অভিযানে জেলেদের হামলার শিকার ইউএনও

শরীয়তপুরের জাজিরায় মা ইলিশ রক্ষা অভিযানে গিয়ে জেলেদের হামলার শিকার হয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নৌ পুলিশ সদস্যরা।

শনিবার (৮ অক্টোবর) রাতে শরীয়তপুরের জাজিরার মাঝিরঘাট সংলগ্ন পাইনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় মৎস অফিসের দু’কর্মচারী আহত হয়েছেন।

জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার সন্ধ্যায় দুটি স্পিড বোট ও একটি ট্রলারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জামাল হোসাইন ও মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির বেশ কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে নিয়ে পদ্মা নদীতে অভিযানে নামেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামরুল হাসান সোহেল।

রাত পৌনে ১০টার দিকে পাইনপাড়া এলাকায় গেলে একটি ট্রলারে থাকা জেলেরা ভ্রাম্যমাণ আদালতে ওপর হামলা করেন। ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। দেশীয় অস্ত্র টেঁটা ও সুরকিও ছোড়েন জেলেরা। একপর্যায়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে নৌপুলিশ ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে। পদ্মা সেতু দক্ষিণ থানার পুলিশ সদস্যরা ওই চর থেকে তাদের উদ্ধার করে মাঝিরঘাটে নিয়ে আসে।

এ সময় পাইনপাড়া এলাকার নুরুল হকের ছেলে দ্বীন ইসলাম (৪২), বড়কান্দি এলাকার ফজলের ছেলে শানোয়ার (২০), বড় নওপাড়া এলাকার দবির আকনের ছেলে রিয়াদ (২২), আ. বেপারি কান্দির করিম মালতের ছেলে আক্কাস মালত (৪০), একই এলাকার মোকলেছের ছেলে মোক্তার মিয়া (২০) ও আক্কাস মোড়লের ছেলে রাজিব মিয়া (২৮), বাওদিয়া এলাকার মালেক বেপারীর ছেলে শাকিল (১৯), ধোলাইপাড় এলাকার কাশেম সরকারের ছেলে মনির হোসেন (২৬), মোহর আলী মাদবর কান্দি এলাকার হান্নান ফকিরের ছেলে সুজাত ফকির (২০) ও একই এলাকার আব্দুল হান্নান ফকিরের ছেলে বাবুল ফকির (৪০)।আটক করে নৌ পুলিশ। এদের মধ্যে ৯ জনকে এক মাসের ও একজনকে দুই মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া মাছ ধরার একটি ট্রলার ও দুই লাখ মিটার জালও জব্দ করা হয়।

জাজিরা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আবুল বাশার বলেন, এখন ইলিশের প্রজনন মৌসুম। এ সময় মা ইলিশ মিঠা পানিতে ডিম ছাড়ে। এ কারণে বৃহস্পতিবার রাত ১২টা থেকে ২৮ অক্টোবর মধ্যরাত পর্যন্ত সব ধরনের মাছ শিকারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এ নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে কিছু জেলে নদীতে ইলিশ শিকার করছিলেন। ইউএনওর নেতৃত্বে আমরা জাজিরায় পদ্মা নদীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালাই। পাইনপাড়া এলাকায় রাতে আমাদের ওপর হামলা করেন জেলেরা।

মাঝিরঘাট নৌ-পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) জহিরুল হক বলেন, হামলার ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাঁদের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রোববার তাদের জেলা কারাগারে পাঠানো হবে।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট কামরুল হাসান সোহেল বলেন, আমরা সারা দিন পদ্মা নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে মা ইলিশ সংরক্ষণে অভিযান চালাই। এতে জেলেরা আমাদের ওপর ক্ষুব্ধ হন। রাতে পদ্মা নদীর পাইনপাড়া এলাকায় গেলে তারা ট্রলার নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আত্মরক্ষার্থে ১০ রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়। হামলার ঘটনায় ১০ জনকে আটক করা হয়েছে।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *