সাংবাদিক ইলিয়াস-বাবুল আক্তার বিরুদ্ধে পিবিআই প্রধানের মামলা
বিদেশে অবস্থানরত একটি বেসরকারি টেলিভিশনের সাবেক সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন ও সাবেক এসপি বাবুল আক্তারসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করল পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-পিবিআই। তদন্ত সংস্থাটির প্রধান বনজ কুমার মজুমদার আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডি থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এ মামলা করেন।
মামলায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট এবং তদন্তসংস্থা পিবিআই ও পিবিআইপ্রধানের বিরুদ্ধে অপ্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছে।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইকরাম আলী মিয়া এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, পিবিআইপ্রধান বনজ কুমার মজুমদার বাদী হয়ে ইলিয়াস হোসেন ও সাবেক এসপি বাবুল আক্তার, তার ভাই হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা আব্দুল ওয়াদুদ মিয়ার নামে মামলা করেছেন।
ওসি জানান, ধানমন্ডি থানার পরিদর্শক (অপারেশন) রবিউল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করবেন।
এ ব্যাপারে বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘অসত্য তথ্য ছড়ানো, জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি ও মামলা অন্যদিকে নেওয়ার চেষ্টার অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করা হয়েছে। আমি নিজেই বাদী হয়ে মামলা করেছি।’
মামলায় যাদের নাম রয়েছে তাদের মধ্যে ইলিয়াস হোসেন ছাড়া বাকি তিনজন দেশেই আছেন। এরমধ্যে সাবেক এসপি বাবুল আক্তার স্ত্রী মিতু হত্যা মামলায় কারাগারে রয়েছেন। দেশে থাকা আসামিদের গ্রেপ্তার করা হবে কি না জানতে চাইলে ধানমন্ডি থানার ওসি বলেন, ‘এটা তদন্ত কর্মকর্তার ব্যাপার। তিনি তদন্তের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেবেন।’
এর আগে, মিতু হত্যা মামলার তদন্ত নিয়ে প্রবাসী সাংবাদিক ইলিয়াস হোসেন তার ইউটিউব চ্যানেল থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিলেন। সেই ভিডিওতে বলা হয়েছে, এই মামলায় বাবুল আক্তারকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফাঁসিয়েছেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার। এছাড়াও তাকে রিমান্ডে নির্যাতনও করা হয়েছে। মিথ্যা সাক্ষী সাজানোর অভিযোগও রয়েছে।
এদিকে ইলিয়াসের ভিডিওটি প্রকাশের পরই বনজ কুমার মজুমদারসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলার আবেদন করেন বাবুল আক্তার। তবে মামলার আবেদন খারিজ করে দেন আদালত।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরের নিজাম রোডে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের গুলি ও ছুরিকাঘাতে খুন হন বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। ওই সময় এ ঘটনা দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচিত হয়। ঘটনার সময় মিতুর স্বামী তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার অবস্থান করছিলেন ঢাকায়। ঘটনার পর চট্টগ্রামে ফিরে তিনি পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে বাবুল আক্তারের দায়ের করা মামলায় মিতু হত্যাকাণ্ডে তারই সম্পৃক্ততা পায় পিবিআই। এরপর গত বছরের ১২ মে আগের মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার দিন বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ থানায় মামলা দায়ের করেন মিতুর বাবা সাবেক পুলিশ পরিদর্শক মোশাররফ হোসেন। ওই দিনই মামলাটিতে বাবুলকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পিবিআই। সেই থেকে কারাগারে আছেন তিনি। সেই থেকে দুটি মামলায় তদন্ত করছে পিবিআই।