রাজশাহী

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকার অশালীন টিকটক ভিডিও

রাজশাহী গোদাগাড়ী উপজেলার একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক শিক্ষিকার টিকটক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। অশালীন ভাষায় টিকটক ভিডিওর ওই শিক্ষিকা শাস্তির মুখে পড়তে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম  সানজিদা খাতুন রাখি।

সহকারী শিক্ষক সানজিদা খাতুন রাখি রাজশাহীর পবা উপজেলার বসুয়ায় বাসিন্দা। তবে গোদাগাড়ীতেও রয়েছে তাদের বাড়ি। তিনি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সালামের মেয়ে। ২০১১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করেন। ২০১৭ সালে পিতার মুক্তিযোদ্ধা কোটায় গোদাগাড়ী সোনাদিঘী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগ পান সানজিদা।

পারিবারিকভাবে বিয়ে হলেও বিভিন্ন টানাপোড়েনের কারণে সংসার টেকেনি তার। বিচ্ছেদ হয় স্বামীর সঙ্গে। তবে বিচ্ছেদের পর একটি ছেলে সন্তান নিয়ে বসবাস তার।

সানজিদা জানান, বিষণ্ন জীবন-যাপন থেকে মুক্তি পেতে বেছে নেন ফেসবুক ও টিকটক। ২০০৯ সালে খোলেন ফেসবুক আইডি, পরে টিকটক। ধীরে ধীরে আসক্ত হয়ে পড়েন ফেসবুক ও টিকটকে। বর্তমানে প্রায় পাঁচ হাজার টিকটিক ভিডিও আছে তার। সম্প্রতি তিনি অশ্লীল ভাষা ব্যবহার করে টিকটক ভিডিও তৈরি করেছেন। পরে সেটি নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে দিলে তা ভাইরাল হয়।কিছু ব্যক্তি টিকটক ও ফেসবুকে আমাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করে। এই কারণে আমি ৬টি টিকটক ভিডিও রাগের বসবর্তী হয়ে অশ্লীল ভাষা বানিয়েছি। তবে নিজের ভুল বোঝার পর তা সরিয়েও ফেলি এবং ক্ষমা চেয়ে আরেকটি ভিডিও তৈরি করি। তাতেও অনেকে গালাগাল করে মন্তব্য করেছেন।

অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এর আগেও টিকটক ভিডিও করার কারণে কর্তৃপক্ষ তাকে শোকোজ করেছিরেন। ওই সময় নিজের ভুলের কথা স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া সেই যাত্রায় বেচে যান তিনি।

স্কুলের একাধিক শিক্ষক জানান, মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সানজিদা আমাদের সবাইকে এক প্রকার জিম্মি করে রেখেছেন। শুধু নিজ বাড়িতেই নয়; ক্লাশরুম ও অফিসসহ যেখানে খুশি সেখানেই তিনি টিকটক করেন। প্রতিবাদ করলেই তার বাবার মুক্তিযোদ্ধার পরিচয় দেখিয়ে উল্টো ভয়ভীতি দেখান।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জানে আলম বলেন, ‘কিছু দিন আগেই ওই শিক্ষিকার বিরদ্ধে একটি অভিযোগ পেয়েছি। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তার বিরুদ্ধে গোদাগাড়ী প্রাথমিক উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।’

গোদাগাড়ী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোসা. লাইলা নাসরিন বলেন, ‘বিষয়টি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে অবগত হওয়ার পর তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের তদন্ত বর্তমানে চলমান রয়েছে। এবিষয়ে জেলা প্রশাসক ও ইউএনও মহোদয়ের সাথেও কথা হয়েছে। বর্তমানে বিষয়টি তদন্তনাধীন। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

লাইলা নাসরিন বলেন, ‘এর আগেও এধরনের ঘটনা তিনি ঘটিয়েছিলেন সত্য। ওই সময় নিজ অপরাধের বিষয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছিলেন। তাই বিশেষ বিবেচনায় তাকে ক্ষমা প্রদর্শণপূর্বক নিজ কর্মে ফেরার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ঘটনার পুণরাবৃত্তি করায় তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জয়া মারীয়া পেরেরা বলেন, ‘ঘটনাটি আমার পুরোপুরি জানা নেই, সামান্য শুনেছি। তবে তিনি একজন শিক্ষক হিসেবে এধরনের কাজ কখনই করতে পারেন না। যেহেতু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আদর্শ ও নৈতিকতার শিক্ষা দেওয়া হয়। তাই তার এমন আচরণ মোটেই কাম্য নয়। বিষয়টি বিস্তারিত জেনে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

NewsDesk

Recent Posts

ভিসা আবেদনকারীদের যে বার্তা দিল মার্কিন দূতাবাস

কোটা সংস্কার আন্দোলন ও স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার আওয়ামী সরকারের পতন ঘিরে বাংলাদেশের চলমান পরিস্থিতিতে গত…

1 year ago

শেখ হাসিনা ও ভারতকে সতর্কবার্তা দিলেন ড. ইউনূস

দেশ থেকে পালিয়ে যাওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতকে একহাত নিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড.…

1 year ago

নির্বাচন কমিশন পদত্যাগের ঘোষণা

পদত্যাগ করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালসহ পাঁচ কমিশনার । আজ বৃহস্পতিবার (৫…

1 year ago

৬০ কিমি বেগে ঝড়ের পূর্বাভাস ৮ জেলায়

৮ জেলায় সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝোড়ো হাওয়াসহ বজ্রবৃষ্টি হতে পারে ,মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর…

1 year ago

জাতীয় সরকার ও দ্বিকক্ষ সংসদ চান তারেক রহমান

জনগণের সমর্থন নিয়ে বিএনপি ভবিষ্যতে ‘জাতীয় সরকারের’ মাধ্যমে দেশ পরিচালনা চায় বলে জানিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত…

1 year ago

স্বৈরাচারী আওয়ামী লীগ সরকার পতনের ১ মাস পূর্তি

স্বৈরাচারী শাসক শেখ হাসিনার কবলমুক্ত হওয়ার এক মাস পার করছে বাংলাদেশ। আজ থেকে ঠিক একমাস…

1 year ago