আইন-আদালতঢাকাসারাদেশ

মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যার অভিযোগে দুজনের যাবজ্জীবন নারায়ণগঞ্জে

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে মাদ্রাসা ছাত্র আরিফুর রহমান খোকন ওরফে আকাশ (১৭) হত্যা মামলায় দুই জনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন জেলা ও দায়রা জজ আদালত। একইসঙ্গে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, জান্নাতি বেগম ওরফে শাবনুর (২০) ও সিদ্দিক আলী (৫৫) । রায় ঘোষণার সময়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন। নিহত মাদ্রাসাছাত্র আয়বুর রহমান হবিগঞ্জের তেঘরিয়া গ্রামের আবদুল হাকিমের ছেলে।

নারায়ণগঞ্জ আদালত পুলিশ আসাদুজ্জামান বলেন, মামলার চার আসামির মধ্যে জান্নাতি ও সিদ্দিক নামের দুজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। অন্য দুই আসামি সাবিনা ও সুমন অপ্রাপ্তবয়স্ক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আদালতে আলাদা অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ জন্য ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনাল সিদ্ধান্ত নেবেন।

আসাদুজ্জামান জানান, ২০২১ সালের ৪ এপ্রিল হবিগঞ্জের তেঘরিয়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ হয় ১৭ বছর বয়সী মাদ্রাসাছাত্র আয়বুর রহমান। নিখোঁজের ৮ দিন পর ১২ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ এলাকায় একটি বাড়ির ছাদে তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় নিহত কিশোরের বাবা চারজনকে আসামি করে রূপগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা করেন। ওই বছরের ৩০ নভেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। পুলিশের তদন্তে বেরিয়ে আসে নিহত আয়বুরের বড় ভাই নজরুলের কাছে মামলার আসামি সিদ্দিক আলী ২০ হাজার টাকা পেতেন। কিন্তু নজরুল পাওনা টাকা দিতে অস্বীকার করলে আয়বুরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সিদ্দিক। পরিকল্পনামতো জান্নাতি, সাবিনা, সুমন নামের তিনজনকে ভাড়া করেন সিদ্দিক।

আরও জানান, জান্নাতি নিহত আয়বুরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। একপর্যায়ে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের বরাব এলাকার সুহর আলীর বাড়িতে ঘর ভাড়া নিয়ে আয়বুরকে নিয়ে আসেন জান্নাতি। পরে সেখানে অন্য আসামিরা আসেন। ওই বাসায় নুডলসের সঙ্গে নেশাদ্রব্য মিশিয়ে আয়বুরকে খাইয়ে প্রথমে অচেতন করেন। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আয়বুরকে হত্যা করেন আসামিরা। মামলার আসামিরা আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

নিহত আয়বুরের বাবা আবদুল হাকিম বলেন, তাঁর ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পর তাকে না পেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন তিনি। পুলিশ জানায়, রূপগঞ্জে ছেলের লাশ পাওয়া গেছে। ছেলে হত্যার কষ্ট সহ্য করতে না পেরে তার মা মারা গেছে। ভেবেছিলেন, আদালত আসামিদের ফাঁসি দেবেন, কিন্তু তাঁদের যাবজ্জীবন হয়েছে। তিনি আসামিদের ফাঁসি চান।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *