Generalঅর্থনীতিসারাদেশ

৯ পণ্যের দাম নির্ধারণ করবে সরকার

চাল, আটা, ময়দা, তেল, চিনি, মসুর ডাল, ডিম, সিমেন্ট, রড– এই ৯টি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দেবে সরকার।

আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এসব পণ্যের যৌক্তিক দাম কী হওয়া উচিত তা ঠিক করা হবে। এরপর বাজারে এই ঘোষিত দাম মানা না হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি বা ব্যবসায়ীর তিন বছরের জেলও হতে পারে।

মঙ্গলবার বাজারে পণ্যের সরবরাহ, মজুত ও আমদানি প্রক্রিয়ার অগ্রগতি বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি জানান, আন্তর্জাতিক বাজারদর ও অভ্যন্তরীণ উৎপাদন ও সরবরাহ পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে এই ৯টি পণ্যের যথার্থ দাম কী হওয়া উচিত, তা নির্ধারণ করে দেবে সরকার।

টিপু মুনশি বলেন, ‘এতদিন ট‌্যারিফ কমিশন শুধু ভোজ্যতেল ও চিনির মূল্য নির্ধারণ করে দিত। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতা ও অভ্যন্তরীণ বাজারে ডলারের মূল্যবৃদ্ধির সুযোগ নিয়ে এই পণ্যগুলোর দাম অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে, যা হওয়া উচিত ছিল না।

 বিষয়গুলো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নজরে এসেছে এবং তা নিয়ন্ত্রণে রাখতে ধারাবাহিকভাবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে। কিন্তু প্রকৃত অর্থে বাজারে স্থিতিশীলতা তৈরি করা যায়নি। এমন প্রেক্ষাপটে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট পণ্যগুলোর সব স্টেকহোল্ডারদের নিয়ে এই বৈঠক করেছে।’

বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এখন থেকে ভোজ্যতেল ও চিনির পাশাপাশি চাল, আটা, ময়দা, মসুর ডাল, ডিম, সিমেন্ট ও রডের দামও নির্ধারণ করে দেবে সরকার। সার্বিক বিবেচনায় এই পণ্যগুলোর দাম কী হওয়া উচিত তা নির্ধারণ করতে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। তারা আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এসব পণ্যের সব পর্যায়ের অংশীজনদের নিয়ে আলোচনা করে যথাযথ দাম নির্ধারণ করবে।

নির্ধারিত দাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে। সরকার নির্ধারিত এই দাম কোনো স্তরের ব্যবসায়ী পর্যায়ে লঙ্ঘিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ী বা ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জরিমানার পাশাপাশি আইনি ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।

বর্তমানে মজুত, কারসাজি কিংবা কৃত্রিম সংকটের মাধ্যমে বাড়তি দাম রাখার ক্ষেত্রে বর্তমান আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ তিন বছর সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনসহ মাঠপর্যায়ের দায়িত্বে থাকা সব সংস্থাকে স্পষ্ট বলে দেয়া হয়েছে, কোনো ব্যবসায়ী কোনো পণ্যে কারসাজি করলে কিংবা অযৌক্তিক দাম রাখলে, মামলা দিতে হবে। শুধু জরিমানা করেই যেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা শেষ করা না হয়।

বৈঠকে বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মাহফুজা আখতার, এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু এবং চট্টগ্রাম চেম্বার অফ কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান মো. মফিজুল ইসলাম, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানসহ বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

Loading

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *