আইভি রহমানের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী
সাবেক রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক মহিলাবিষয়ক সম্পাদক বেগম আইভি রহমানের ১৮তম মৃত্যুবার্ষিকী। ২০০৪ সালের এদিনে (২৪ আগস্ট) ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) মারা যান তিনি।
মারা যাওয়ার তিন দিন আগে ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসবিরোধী শান্তি সমাবেশে গ্রেনেড হামলায় আহত হন আইভি রহমান। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে ২৪ আগস্ট শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
দিনটি উপলক্ষে প্রতি বছরের মতো এবারও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে। এ উপলক্ষে রাজধানীর গুলশানের বাসায় এক দোয়া ও কোরআনখানির আয়োজন করা হয়েছে। এছাড়া ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগ কোরআনখানি, দলীয় কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও দোয়ার আয়োজন করেছে।
বেগম আইভি রহমানের পুরো নাম জেবুন নাহার রহমান আইভি। তিনি ১৯৪৪ সালের ৭ জুলাই ভৈরবের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা জালাল উদ্দিন আহমেদ ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ ও মা হাসিনা বেগম একজন গৃহিণী ছিলেন।
আইভি রহমান ১৯৫৮ সালের ২৭ জুন নবম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন তুখোড় ছাত্রনেতা জিল্লুর রহমানের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। আট বোন ও চার ভাইয়ের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। তার একমাত্র ছেলে নাজমুল হাসান পাপন বর্তমানে কিশোরগঞ্জ-৭ (ভৈরব-কুলিয়ারচর) আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি। আর দুই মেয়ে তানিয়া ও ময়না।
ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে আইভি রহমান অসাম্প্রদায়িক ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বর্ণাঢ্য জীবন শুরু করেন। সদালাপী আইভি রহমান ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত মহিলা আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
১৯৭১ সালে তিনি ভারতে গিয়ে সশস্ত্র ট্রেনিং নিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ১৯৭৮ সালে আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা নির্বাচিত হন। ২০০২ সালে দলের জাতীয় কাউন্সিলেও তাকে একই পদে নির্বাচিত করা হয় এবং মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এই পদে দায়িত্ব পালন করে গেছেন।
এর আগে ১৯৮০ সাল থেকে কয়েক বছর মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। নারী অধিকার আদায়ের সংগ্রামে এবং সমাজের অবহেলিত শিশু ও প্রতিবন্ধীদের কল্যাণেও আইভি রহমানের গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা ছিল।
অকুতোভয়, আজন্ম সংগ্রামী এ মানুষটির আকস্মিক মৃত্যু বাঙালি জাতি মেনে নিতে পারেনি। তেমনি পারেনি ভৈরবের সর্বস্তরের মানুষ। আন্দোলন, সংগ্রামে আইভি রহমানের অবদানের কথা বাঙালি জাতি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে। আইভি রহমানকে স্মরণ করে ভৈরব স্টেডিয়ামের নাম রাখা হয় শহীদ আইভি রহমান পৌর স্টেডিয়াম। তার নিজ গ্রামে আইভি চত্বর নামে একটি ম্যুরাল স্থাপন ছাড়াও ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ভৈরব শহরের কমলপুর এলাকায় আইভি রহমান স্মৃতি ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছে।